আবার বিজেপিতে ভাঙন। এবার উত্তরবঙ্গের ফালাকাটায়। লোকসভায় বিজেপির সাফল্য পাওয়া উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতেও এবার বিজেপি শিবিরে ভাঙন ধরাতে শুর করেছে শাসক দল তৃণমূল।বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই গেরুয়া শিবিরের 'দল ভাঙানোর' রাজনীতিতে যেন তাল কাটছে। উলটে তৃণমূলের অনুকূলে জোয়ার আসছে। সোমবারও যেমন বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা গৌতম সরকার অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন। উল্লেখ্য, এদিনই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই দলবদলের পর বিজেপির দাবি, একজন জনপ্রতিনিধি দল ছাড়লেও সংগঠনের কোনও ক্ষতি হবে না। যদিও গোটা রাজ্যজুড়েই যেভাবে বিজেপির ঘর ভাঙছে, তাতে আশঙ্কিত বহু জেলা নেতৃত্বও।
উল্লেখ্য, তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে দায়িত্ব পেয়েই তৎপরতা দেখিয়ে ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রের পূর্ব কাঁঠালবাড়ি অঞ্চলের সাংগঠনের চেহারাই বদলে দিচ্ছেন ঋতব্রত , মৃদুল ,সৌরভ,মনোরঞ্জন দে’রা। তৃণমূলের সংগঠন মজবুত করার পাশাপাশি ওই এলাকার বিজেপির ঘরেও ভাঙন ধরছে অহরহ। উল্লেখ্য, ফালকাটায় উপনির্বাচনে তৃণমূলকে কয়েক কদম এগিয়ে রাখছে এই সাংগঠনিক শক্তিই। উল্লেক্ষ্য, দুটি ব্লকের মধ্যে থাকায় পূর্ব কাঁঠালবাড়িতে তৃণমূলের নড়বড়ে সংগঠন দেখে
প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দলের তরফে ফালাকাটা কেন্দ্রের বিশেষ
দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়।এই যোগদান পর্বে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি মানিক দে, আলিপুরদুয়ারের বিধায়্ক সৌরভ চক্রবর্তী সহ একঝাঁক তৃণমূল নেতা উপস্থিত ছিলেন।
জেলায় জেলায় বিজেপি ছেড়ে নিচুতলার কর্মীদের তৃণমূলে নাম লেখানোর ঘটনা ঘটে চলেছে। মূলত জুলাই মাসে এই প্রক্রিয়া পুরোদস্তুর শুরু হয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। যদিও দলের নেতারা প্রকাশ্যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, যত জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক লোক তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসছেন। কিন্তু বাস্তবে তার অবশ্য দেখা মিলছে না।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাস তালুক খড়্গপুরেও ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল। দিলীপ ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দুই বিজেপি নেতা শৈলেন্দ্র সিং ও সজল রায় সদলবলে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কোচবিহারেও বিজেপির প্রায় কয়েকশো কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে এক কর্মসূচিতে দলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপির কয়েক হাজার কর্মী। নদিয়ার ধুবুলিয়ায় রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের উপস্থিতিতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখেয়েছেন বহু নেতা কর্মী। আবার খাস কলকাতার বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে গত ১৫ সেপ্টেম্বর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বিজেপির কয়েকশো নিচুতলার কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। একই প্রবণতা মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া ও উত্তরবঙ্গেও। এমনকী বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র, বিধায়করাও শাসক শিবিরে নাম লিখিয়েছেন।
তবে বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মন বলেন, প্রশাসনিক চাপেই হয়ত
আমাদের একজন জনপ্রতিনিধি দল বদল করেছেন। এজন্য বিজেপির সাংগঠনিক কোনও ক্ষতি
হবে না৷ বরং উপনির্বাচনে এবারও পূর্ব কাঁঠালবাড়িতে ভোটে লিড পাব আমরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন